নিজেকে ভালো রাখার ১০ টি মাধ্যম।
নিজেকে ভালো রাখা বা 'সেলফ-কেয়ার' কোনো বিলাসিতা নয়, বরং এটি সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো রাখার ১০টি কার্যকর উপায় নিচে দেওয়া হলো:
১. পর্যাপ্ত ঘুম ও সুষম খাবার:
শরীর ও মন ভালো রাখার ভিত্তি হলো ঘুম। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন। পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করুন এবং শাকসবজি ও ফলমূলযুক্ত সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। শরীর সুস্থ থাকলে মনও প্রফুল্ল থাকে।
২. নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়ামের ফলে শরীরে 'এন্ডোরফিন' নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা প্রাকৃতিকভাবে মন ভালো রাখে এবং দুশ্চিন্তা কমায়।
৩. নিজের জন্য সময় বের করা (Me Time):
সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝে অন্তত ২০-৩০ মিনিট সময় শুধুমাত্র নিজের জন্য রাখুন। এই সময়ে আপনার পছন্দের কোনো কাজ করুন—যেমন বই পড়া, গান শোনা, বাগান করা বা চুপচাপ বসে থাকা। এটি আপনাকে রিচার্জ হতে সাহায্য করবে।
৪. ‘না’ বলতে শেখা:
সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়। যেই কাজ বা দায়িত্ব আপনার মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বা আপনার সাধ্যের বাইরে—সেক্ষেত্রে বিনয়ের সাথে ‘না’ বলতে শিখুন। নিজের মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দিন।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি (Digital Detox):
অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার অনেক সময় হতাশা ও নিজের সাথে অন্যদের তুলনার জন্ম দেয়। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ফোন বা ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকুন এবং বাস্তব জীবনের মুহূর্তগুলো উপভোগ করুন।
৬. প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো:
পরিবার, বন্ধু বা প্রিয় মানুষদের সাথে নিয়মিত কথা বলুন এবং সময় কাটান। মনের ভাব প্রকাশ করলে মানসিক ভার কমে। ভালো সম্পর্কগুলো মানসিক শক্তির বড় উৎস।
৭. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ (Gratitude):
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অন্তত ৩টি ভালো জিনিসের কথা ভাবুন বা লিখে রাখুন, যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। নেতিবাচক চিন্তার বদলে ইতিবাচক জিনিসের দিকে মনোযোগ দিলে জীবন অনেক সুন্দর মনে হয়।
৮. প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা:
মাঝে মাঝে খোলা আকাশ, গাছপালা বা নদীর ধারে সময় কাটান। প্রকৃতির সান্নিধ্য মনকে শান্ত করে এবং চোখের আরাম দেয়।
৯. নতুন কিছু শেখা:
নিজেকে ভালো রাখার দারুণ উপায় হলো নতুন কোনো দক্ষতা অর্জন করা। সেটা হতে পারে নতুন কোনো ভাষা শেখা, রান্না করা বা কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং একঘেয়েমি দূর করে।
১০. নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা না করা:
মনে রাখবেন, প্রতিটি মানুষের জীবন ও যাত্রাপথ আলাদা। অন্যের সাফল্যের সাথে নিজের তুলনা না করে, নিজের উন্নতির দিকে মনোযোগ দিন। নিজেকে ভালোবাসুন এবং নিজের ছোট ছোট অর্জনগুলোর প্রশংসা করুন।
নিজেকে ভালো রাখা একদিনের কাজ নয়, এটি একটি নিয়মিত চর্চা।
