হে প্রিয় অভিভাবক!

শুধু ঢাকা শহরের কথাই বলি, যেখানে রাত ১০ টা পার হওয়ার আগেই বিভিন্ন ফুটওভার ব্রিজ, ব্যস্ত সড়কের মোড়, রেললাইনের পাশে কিংবা নিরিবিলি জায়গায় শত শত নারী সাজগোজ করে দাঁড়িয়ে থাকে খদ্দের পাওয়ার আশায় যেখানে পণ্য তারা নিজেরাই। 

সেই শহরের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের আবাসিক হোটেলের কার্ড, নাম্বার দেখেনি এমন ভদ্রলোক সমাজে আছে কিনা জানি না। কার্ডের এসব ভাইদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন কলেজ, ভার্সিটির মেয়ে চাহিদামতো সাপ্লাই করে তাদের ক্রেতাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা। 


স্কুল-কলেজের আশেপাশে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে কেবিন, রুম ভাড়া পাওয়া যায় ঘণ্টায় কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রেমিক-প্রেমিকা নিয়ে এসে যেন অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে পারে। 


ঢাকার মধ্যে কিংবা আশেপাশে আছে শত শত রিসোর্ট যেখানে ছেলে-মেয়েরা নিজেদের মতো করে “টাইম স্পেন্ড” করতে পারে। প্রেমিক-প্রেমিকা থাকলে ২০ টাকা দিয়ে পাবলিক পার্কের টিকিট কেটেও ঘুরতে যেতে পারে নিজেদের মতো করে “সময় কাটানোর” জন্য।


ক্লাসের কথা বলে ডেটে যাওয়া ছেলে-মেয়ের কথা বাদই দিন, আপনার সন্তানের পকেটে কয়েকশো টাকা থেকে শুরু করে কয়েক হাজার টাকা থাকলেই আবেগের বয়সটাতে “ভুল” করে ফেলতে পারে। আচ্ছা, বিষয়গুলো কি আপনারা অভিভাবকরা জানতেন না? 


আপনার সন্তান ঘরের বাইরে এক পা বাড়ালেই তার কাছে যেনা-ব্যভিচার এত সহজে এক্সিসেবল।


আচ্ছা, আপনারা কি যৌবনের এসব সময় পার করে আসেননি? 

অবশ্য, আপনারা নিজের কিংবা সমবয়সীদের অতীত ভুলে এখন সন্তানের সামনে সাধু সাজছেন হয়তো। তবুও একটু চিন্তা করা উচিত যে, আপনাদের সময়ের তুলনায় এইসময়ে ভুল পথে পা বাড়ানোর সুযোগ অনেক বেশি। আপনার সন্তানও এখন পূর্ণাঙ্গ (ম্যাচিউরড) মানুষে পরিণত হয়েছে। 


আমি জানি, ভদ্রলোকের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করা। আমি জানি, এসব কথা বলা বেয়াদবি। কিন্তু কী করা উচিত যখন আপনারা অভিভাবক সুলভ আচরণ করেন না? 


যখন সন্তানের সামর্থ্য নেই বলে বিয়ে দেন না অথচ সেই সন্তানই ডেটিংয়ের জন্য মাসে মাসে এত টাকা খরচ করে, যত টাকা দিয়ে একটা সংসার ভালোভাবে চলে যায়?


আপনাদের অনেকেরই দাড়ি টুপি থাকে অথচ আপনার মেয়েটা সেজেগুজে যখন বেপর্দায় ঘর থেকে বের হয় কিংবা বোরকা গায়ে দিয়ে দিনের পর দিন আরেক ছেলের সাথে সময় কাটায়, তখনো কি মেয়ের বিয়ের প্রয়োজনীয়তা বোঝেন না? বিয়েটা সহজ করলে এসব ভুল থেকে বিরত থাকা যায় এতটুকু জ্ঞান কি সেই ইসলাম থেকে আসেনি, যে ইসলামের বিধান মেনে টুপি পরছেন, দাড়ি রাখছেন? 


সমাজের সামনে ভদ্রলোক সাজতে পারবেন ঠিকই, তবে আপনার সন্তানের বয়স হওয়ার পরেও বিয়ের ব্যবস্থা না করার জন্য তাদের যেনা-ব্যভিচারের দায় থেকে আপনারা আল্লাহর দরবারে মুক্তি পাবেন না। আপনাকে বলা হয়েছিল, পরিবারের দায়িত্বশীল হতে অথচ আপনি সমাজকে ইলাহ বানিয়ে সন্তানকে হালাল থেকে দূরে রেখে, হারামের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। সময় এসেছে আপনার অংশটুকু আপনার সামনে তুলে ধরার। এটার জন্য বেয়াদবি করতে হয়েছে ঠিকই, তবে আপনি অজ্ঞতার ওজর আল্লাহর কাছে দেখাতে পারবেন না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url